তেলের পরিবর্তে গ্যাসে চলছে মোটরসাইকেল


editor প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ /
তেলের পরিবর্তে গ্যাসে চলছে মোটরসাইকেল

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে তেলের পরিবর্তে এলপিজি গ্যাসে মোটরসাইকেল চালিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল কাউসার। সর্বপ্রথম নিজের মটরসাইকেলে পরীক্ষামূলকভাবে এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করেন তিনি। পরবর্তীতে পরীক্ষামূলকভাবে আরও কয়েকটি গাড়িতে এই গ্যাস সিলিন্ডার লাগিয়ে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার এই পদ্ধতিতে একই মোটরসাইকেলে তেল অথবা গ্যাস দুটিই ব্যবহার করা যাবে। আর এই নতুন উদ্বোধনী সিস্টেম ফিটিং করতে খরচ পড়ছে ১৫ হাজার টাকার মতো।

চাঁপাইনববাগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সিসিডিবি মোড় এলাকায় ছোট একটি দোকানঘরে তিনি এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

মিলন আলী একজন মোটরসাইকেল চালক জানান, তার একটি ১৫০ সিসি এপাচি আরটিএর মোটরসাইকেল আছে। ১২৮ টাকায় এক লিটার পেট্রোল নিলে তিনি ৫০ কি.মি চালাতে পারেন। কিন্তু এখন তিনি ১২৪ টাকার গ্যাস নিলে প্রায় ১০০ কি.মি মতো চালাতে পারেন।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বাসিন্দা মেসবাউল ইসলাম বলেন, আমার বাইকে এলপিজি লাগিয়েছি। আমরা আগে তেলে গাড়ি চালাতাম। তেলে গাড়ি চালানো অনেক ব্যয়বহুল। তেলের চেয়ে অর্ধেক টাকায় গ্যাস ব্যবহার করে একই কি.মি গাড়ি চালাতে পারবো এই কথা শুনে আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে এসে আমার গাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার লাগিয়ে নিয়েছি। মোটরসাইকেলে গ্যাস সিলিন্ডার সিস্টেম সেটআপ করতে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি আগে যেমন গাড়িতে মাইলেজ পেতাম তেমনি এখনও মাইলেজ পাচ্ছি। গাড়ির টান ও শক্তি তেলের মতোই আছে। গত ছয়মাস থেকে খুবই ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। তাই সরকারের কাছে একজন গ্রাহক ও বাইকার হিসেবে এইটুকু আবেদন জানাই, সরকার যেন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করে দেয়। তাহলে আমরা তেলের চেয়ে কম টাকায় গ্যাসে বাইক চালাতে পারব।

স্থানীয় বাসিন্দা তসিকুল ইসলাম বলেন, এখানে বেশ কিছু মানুষ আসে মোটরসাইকেলে গ্যাস সিস্টেম লাগানোর জন্য। তাদের কাছে জানলাম ১ কি.মি গেলে ১ টাকার মতো খরচ হয়। বেশ কিছু মানুষ আসছে এখানে তারা তাদের মোটরসাইকেলে গ্যাস সিস্টেম লাগিয়ে নিচ্ছে। তাই সরকারের কাছে এটির বিষয়ে আবেদন জানাচ্ছি, যদি পর্যবেক্ষণ করে এটি ভালো মনে হয় তাহলে সরকার যেন তাদের অনুমতি দেয়।

চাঁপাই এলপিজি বাইক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল কাউসার বলেন, প্রথমত আমি এবং শফিক নামে একজন আমাদের গাড়িতে এলপিজি গ্যাস সিস্টেমটি লাগাই। তারপর আমরা এটা নিয়ে গবেষণা করি। দীর্ঘ আটমাস গবেষণা করার পর রুয়েট থেকে এর সিলিন্ডারটি পরীক্ষা করাই। পরে রুয়েট আমাদের একটি সার্টিফিকেট দেয়। তাছাড়া এলপিজি একটি গ্রিন ফুয়েল। এলপিজিতে কোনও কার্বন নেই, এটি একটি ঠান্ডা গ্যাস। আমরা যেই সিলিন্ডার ব্যবহার করছি তাতে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটারের মতো গ্যাস লোড করা যাবে। আর এই পাঁচ লিটার গ্যাসে বাইকটি ২৫০ থেকে ৩০০ কি.মি মতো চলবে। তাছাড়া ১০০ টাকাতে ১০০ সিসির গাড়ি ১০০ কি.মি প্লাস চালানো যাবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ মোটরসাইকেল আছে। তার মধ্যে যদি আমরা ৫০ হাজার মটরসাইকেলকে এলপিজিতে কনভার্ট করতে পারি তাহলে সরকারের প্রতি বছর ৪০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশেই থেকে যাবে। তাছাড়া এটি বাইকারদের জন্যও ভালো হবে কারণ ১২৮ টাকা দিয়ে তেল কিনে ৩০ কি.মি বা ৪০ কি.মি চালানো আসলেই কষ্টকর। সেক্ষেত্রে ৬২ টাকায় এক লিটার গ্রিন ফুয়েল এলপিজি কিনে আমরা ৫০ কি.মি চালাতে পারব। তাই সরকারের আছে আহ্বান জানাব, তারা আমাদের এই সিস্টেম নিয়ে গবেষণা করুক এবং সবদিক বিবেচনা করে অনুমতি দিক।