[ad_1]
নিউজ ডেস্ক:
রংপুর নগরের জিএল রায় রোডের সবুজ হোটেলে বয়ের কাজ করেন রঞ্জু মিয়া। পাঁচ বছর আগে তার দৈনিক হাজিরা ছিল ২৫০ টাকা। এখন তিনি ৫৩০ টাকা পাচ্ছেন। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে হারাগাছের রাজমিস্ত্রি শাহ আলমের মজুরি ছিল ৪০০ টাকা।
এখন তিনি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরি পান। অটোরিকশাচালক সবুর মিয়া প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করছেন। পাঁচ বছর আগে কল্পনাও করেননি এক দিনে এত টাকা আয় হবে। এই অবস্থা রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটের প্রায় ৩০ লাখ শ্রমজীবী মানুষের।
গত পাঁচ বছরে তাদের আয় বেড়েছে দ্বিগুণ। আগের মতো তাদের আধপেটা থাকতে হয় না। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। রংপুর অঞ্চলে একটা সময় ছিল শ্রমিক মানে আধপেটা খাওয়া মানুষ।
সারাদিন কাজ করে একবেলা খাবার আরেক বেলা উপোস কিংবা আধাপেটা থাকতেন। গন্ডায় গন্ডায় বাচ্চা-কাচ্চা। শিশুটিকে বড় হয়ে বাবার পেশা শ্রমিক হতে হবে এটাই ছিল এক এলাকার নিয়ম। কিন্তু শ্রমিকদের এখন আগের অবস্থা নেই। দৃশ্যপট পাল্টেছে।এখন একটি নিম্নবিত্ত পরিবার এবং চাকরিজীবীর চেয়ে শ্রমিক শ্রেণির মানুষ বেশ ভালো আছেন। মূল্যস্ফীতির মধ্যেও এই অঞ্চলের শ্রমিকরা এখন আর আধা পেটা থাকছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোটখাটো চাকরিজীবীদের আয় যেখানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, সেখানে একজন শ্রমজীবী মানুষ দিনে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। কদিন পরেই ধান কাটার মৌসুম শুরু হবে পুরোদমে। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়েবে সে সময়। একজন শ্রমিককে দিনে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিয়েও পাওয়া যাবে না। একজন রাজমিস্ত্রি রং মিস্ত্রি অথবা দিনমজুর দিনে কমপক্ষে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় করছেন। আগে আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাজ না থাকার কারণে শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে হাহাকার দেখা দিত। একবেলা খেয়ে আরেক বেলা অনাহারে থাকতেন। এখন সেই অবস্থা নেই। বলা চলে বছরের ১২ মাসই তারা কাজ করছেন। কাজের অভাবে কাউকে এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না।
রংপুর শ্রম অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, দোকান কর্মচারী ইউনিয়ন, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নসহ হাতে গোনা কয়েকটি সংগঠনের শ্রম অধিদফতরের রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। এসব সংগঠনের শ্রমিক সংখ্যা ৬০ হাজার হলে রেজিস্টার্ডবিহীন শ্রমিকের সংখ্যা ৩০ লাখের ওপর। রংপুর শ্রম অধিদফতরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাদেকুজ্জামান বলেন, পাঁচ বছর আগের তুলনায় এ অঞ্চলের শ্রমিকরা এখন অনেক ভালো আছেন। রেজিস্টার্ড শ্রমিকের সংখ্যা ৬০ হাজার হলেও এই অঞ্চলের শ্রমিকের সংখ্যা ২৫/৩০ লাখ হবে।
আপনার মতামত লিখুন :