বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা দুটিতে নামে ও অজ্ঞাতসহ আসামী করা হয়েছে ৫২৮ জন। এরমধ্যে একটি মামলা হয়েছে বাঘা থানায় ও আরেকটি হয়েছে রাজশাহীর আদালতে। আসামী গ্রেফতার হয়েছে ১০ জন।
জানা গেছে, বাঘায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ২২ জুন সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ৫০ জন আহত হয়। এরমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মাথায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরদিন ২৭ জুন বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার পর গাওপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আমিরুল ইসলাম আমুর কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।
সংঘর্ষের পর ২৩ জুন উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলীকে প্রধান আসামী করে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে করা হয়েছে। তবে এ মামলাটি ২৬ জুন হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এ মামলার দুই নম্বর আসামী পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজসহ মারুফ হোসেন, তরঙ্গ আলী, শাজামাল লিটন, নাসির উদ্দিন, মতিউর রহমান, গোলাম মোস্তফা, শফিউর রহমান শফি, রফিকুল ইসলাম, জহুরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরমধ্যে মেরাজ, মারুফ, তরঙ্গ, শাজামাল, নাসির, মতিউর, মোস্তফাকে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ২৭ জুন একদিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করে। রিমান্ড শেষে ২৮ জুন তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
অপরদিকে বাজুবাঘা ইউনিয়নের তেপুকুকুরিয়া গ্রামের আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে ২৭ জুন রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ ও দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি করেন। বাবুল হত্যার মামলার বাদি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টুকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
এছাড়া আরও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ মামলার আইনজীবী জিয়াউর রহমান বলেন, আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামান মামলা গ্রহণ করে তা এজাহার হিসাবে রেকর্ড করার জন্য বাঘা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাঘা থানার তদন্ত ওসি ও বাবুল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোয়েব খান বলেন, বাবুল হত্যা মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে আকুল কালামের আদালতে দায়ের করা মামলার কোন কাগজপত্র থানায় আসেনি। আসলে ওই মামলাটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এমপি শাহরিয়ার আলম ও বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্বের জের ধরে ২২ জুন সংঘর্ষে এমপি শাহরিয়ার আলমের অনুসারী ২৬ জুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবুল মারা যান।
আপনার মতামত লিখুন :