বাঘায় নির্বাচন পরবর্তী হামলা ভাংচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন


editor প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০২৪, ৯:২৫ অপরাহ্ণ /
বাঘায় নির্বাচন পরবর্তী হামলা ভাংচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

মোহাঃ আসলাম আলী,স্টাফ রিপোর্টার: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চতুর্থ ধাপের নির্বাচন পরবর্তী হামলা,মারপিট,ভাংচুর ও লুটপাট এর প্রতিবাদে আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান রিন্টুর পক্ষে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টায় দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এঘটনায় জেলা প্রশাসক ও রিটানির্ং অফিসার বারবর নির্বাচনের ফলাফল পূণ:গণনার দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে,গত ৫ জুন নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু (মোটরসাইকেল) প্রতিকে ৩২ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু (আনারস) প্রতিকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৯৯ ভোট। যার ব্যবধান হয়েছে ১০৬ ভোট।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে গত ৫ জুন নির্বাচন পরবর্তীতে বিজয়ী প্রার্থী লায়েব উদ্দিন লাভলুর সমর্থকরা ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ সনেট, রাকিবুল ইসলাম শিমুল,মোজাফফর আলী,শাহাদত হোসেন ভোলা,মহসিন মেম্বার,নাসির উদ্দিন,জাহেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ডাবলু,আবদুর রহমান,কিরণ মাহমুদ, মামুন হোসেন,সেন্টু আলী, আশিক আলী, বাবলু মন্ডল, মিজানুর রমহমান,আবদুর রাজ্জাক,জালাল উদ্দিন,তামিম ইকবাল,জাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনকে শারীরিকভাবে লাঞ্জিত,বাড়িতে হামলা,ভাংচুর,লুটপাট করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম,রমজান আলী,নূরুল ইসলাম,বাবলু হোসেন, সেন্টু আলী বাদি হয়ে ৫টি মামলা মামলা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মোঃ আশরাফুল ইসলাম বাবুল,সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির,মঞ্জুরুল ইসলাম মনি,বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার,উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু, কাউন্সিলর মোমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

এ দিকে রোকনুজ্জামান রিন্টুর দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়েছে, ৬৯টি কেন্দ্রের ফলাফল গনণার সময়ে প্রিজাইডিং অফিসার তার নির্বাচনী পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট গণনা করা হয়েছে এবং পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র ভিত্তিক ফলাফলের শীট সরবরাহ করা হয় নাই। এমন কী কেন্দ্র ভিত্তিক ফলাফল শীটে আনারস প্রতিকের নির্বাচনী পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষরও নেওয়া হয় নাই। এছাড়াও অনেক কেন্দ্রে আনারস প্রতিকের পোলিং এজেন্টদের মৌখিকভাবে জানানো ফলাফল ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রেরিত ফলাফলের মধ্যে ব্যাপক অসামঞ্জস্য ও গরমিল রয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ্য করেন, অধিকাংশ কেন্দ্রে আনারস প্রতিকের বৈধ ভোটকে বাতিল ভোট বলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। অনুরূপ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত ফলাফলের সাথে বাতিল ভোটের অসামঞ্জস্য ও গরমিল রয়েছে। প্রদত্ত মোট ভোটের উপস্থিতি চেয়ারম্যান পদে ৪০.০৪%, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯.৯০% এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯.৯৮% ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয়েছে। এতে বাতিলকৃত ভোটেও ব্যাপক পার্থক্য দেখানো হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়ে যে,এই নির্বাচন কোনভাবে অবাধ,সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয় নাই।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্লেষণ করে আনারস প্রতিকের প্রার্থী নিশ্চিত যে,প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বিজয়ী করতেই গণনার ক্ষেত্রে নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত কিছু ব্যক্তি কারচুপির আশ্রয় নিয়েছেন।

এ বিষয়ে আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান বলেন,নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকে লায়েব উদ্দিন লাভলু (মোটরসাইকেল) প্রতিকের সমর্থকরা বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করেন। ভোটের দিন তাঁর কর্মী-সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তাঁরা আগে থেকেই ভোটারদের বলে বেড়ান,‘ভোট যেই পাক,চেয়ারম্যান লাভলুিই হবে’। ভোটের পর থেকে তাঁর কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন করে চলেছে।

এ বিষয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন,নির্বাচন সুষ্ট ও সুন্দভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোন অফিসার কোন প্রকার ভোট কারচুপির আশ্রয় নেননি। এ নির্বাচনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে মাঠে আমি সার্বক্ষনিক ছিলাম। এ বিষয়ে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কড়মচারীগণ সার্বক্ষনিক সততা,নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার ও লোকজনের উপর আনিত অভিযোগগুলো সম্পুর্ণ মিথ্যা,ভিত্তিহীন,বানোয়াট,উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তারা আমাকে পরাস্ত করতে নিজের তৈরি নানা কৌশল করে প্রয়োগ করে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যাচার করছে। অমি তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন,আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান ব্যালট পুণ:গণনা করার জন্য জেলা প্রশাসক ও রিটানির্ং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে আমার কাছে কোন নির্দেশনা আসে নাই। তবে ফলাফলের প্রদত্ত ভোটের ব্যাপারে তিনি বলেন, কারও পছন্দের প্রার্থী না থাকলে ভোট না দিয়ে,সীল না মেরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলে আসতে পারে। সেগুলো হিসাব করে ফলাফলের প্রদত্ত ভোটার উপস্থিতি দেখনো হয়েছে। এ কারণে ফলাফলে কমবেশি হয়েছে।

উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ৭ ও নারী ভোটার ৮২ হাজার ৬৫৬ জন।