অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বোর্ড সভায় মেয়রের সামনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে জুতাপেটা করেছেন সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সমালোচিত ও ভাইরালখ্যাত রোকসানা ইসলাম চামেলী। ডিএসসিসির বোর্ড সভায় উপস্থিত একাধিক কাউন্সিলর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ সোমবার (২০ মে) দুপুরে নগর ভবনে ডিএসসিসির বোর্ড সভায় ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতনকে জুতাপেটা করেন চামেলী। এ সময় ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।
তবে উপস্থিত কাউন্সিলরদের কারো কারো ধারণা, গুলিস্তান, পল্টন, আনন্দবাজার এলাকায় ফুটপাতে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অঘোষিত দ্বন্দ্ব চলছিল। এ ছাড়া গত ২২ এপ্রিল ওই নারী কাউন্সিলরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে ভাইরাল হয়। এর পেছনে রতনকে সন্দেহ করে আসছিলেন রোকসানা ইসলাম চামেলী। হয়ত এসব কারণেই আজ এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তারা।
জানা গেছে, আজ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তের ডানপাশে একটি চেয়ারে বসে ছিলেন সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকসানা ইসলাম চামেলী। আর বামপাশে অন্যান্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে সামনের সারিতে বসে ছিলেন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন।
দুপুর ১২টার দিকে নিজ আসন থেকে উঠে রতনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান চামেলী। কোনো কথা বা তর্ক ছাড়াই হুট করে পা থেকে হিল জুতা খুলে রতনকে পেটাতে থাকেন চামেলী। এ সময় আশপাশের কাউন্সিলররা এগিয়ে গিয়ে চামেলীকে থামান। তবে জুতা পেটানোর সময় রতন চুপচাপ করে নিজ আসনে বসে ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসসিসির এক কাউন্সিলর বলেন, ঠিক কী কারণে চামেলী কাউন্সিলর রতনকে জুতাপেটা করেছেন, তা জানা যায়নি। করপোরেশন সভায় তাদের তর্কও হয়নি। চামেলীর এমন কাণ্ডে সবাই হতভম্ব হয়ে যান। ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বারবার চামেলীকে থামতে বলেছেন। কিন্তু চামেলীর উত্তেজনা কমছিল না। এক পর্যায়ে অন্যান্য নারী কাউন্সিলররা চামেলীকে করপোরেশন সভা থেকে বের করে দেন।
ডিএসসিসির এক নারী কাউন্সিলর বলেন, ডিএসসিসির ইতিহাসে করপোরেশন সভায় এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। আজকের ঘটনা ডিএসসিসিতে কলঙ্ক হয়ে থাকবে। ডিএসসিসির সব নারী কাউন্সিলর চামেলীর বহিষ্কার চান।
আপনাকে কেন জুতাপেটা করা হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন বলেন, ‘হঠাৎ করে এসে এমন কাণ্ড (জুতাপেটা) ঘটাল। আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কোনো ধরনের কথাবার্তা বা পূর্ব শত্রুতা ছাড়াই কেন এমন করেছে সেটি আমি বুঝতে পারছি না। ডিএসসিসি মেয়র তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। ’
এ বিষয়ে জানতে সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর রোকসানা ইসলাম চামেলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ওই নারী কাউন্সিলরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে ভাইরাল হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও প্রভাব খাটিয়ে সরকারি রেলের কোটি কোটি টাকার জমি দখল, অজ্ঞান অবস্থায় শাহবাগের ফুটপাতে পড়ে থাকাসহ আপত্তিকর নানা কাজে জড়ান এই নারী কাউন্সিলর।
আপনার মতামত লিখুন :