বাঁশবাড়িয়া–গুপ্তছড়া রুটে ফেরি বন্ধের আশঙ্কা, মানববন্ধনে উত্তাল চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপ


editor প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২২, ২০২৫, ৯:৪৬ অপরাহ্ণ /
বাঁশবাড়িয়া–গুপ্তছড়া রুটে ফেরি বন্ধের আশঙ্কা, মানববন্ধনে উত্তাল চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপ

নুরুল আফছার, স্টাফ রিপোর্টার : সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে চলা কপোতাক্ষ ফেরি বন্ধের ‘অপচেষ্টা’ বন্ধের দাবিতে আজ চট্টগ্রাম নগর ও সন্দ্বীপে সমকালীন মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করেন, একটি ‘স্বার্থান্বেষী চক্র’ নিজেদের সুবিধা আদায়ে মাত্র এক মাস আগে চালু হওয়া এই ফেরি পরিষেবা বন্ধ করতে তৎপর হয়ে উঠেছে; যারা আর্থিক লাভের জন্য দ্বীপবাসীর নিরাপদ নৌপথের স্বপ্ন ধ্বংস করতে চায়।

২২ এপ্রিল (মংগল বার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ২৪ মার্চ কপোতাক্ষ ফেরি চালু হওয়ার পর সন্দ্বীপের মানুষ প্রথমবারের মতো অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক ও নিয়মিত নৌপথ পেয়েছিল। উদ্বোধনের দিন নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন দুইটি সি‑ট্রাক যুক্ত করার ঘোষণা দিলেও সেগুলোর কোনও অগ্রগতি নেই। বক্তাদের ভাষ্য, বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি‑এর অভ্যন্তরে ‘ঘাপটি মেরে থাকা’ একটি মহল ছোট নৌযান চলাচলে অনুমতি দিলেও ফেরি চলাচল বন্ধে অতি উদ্যোগী; সাগরের উত্তাল অবস্থা দেখিয়ে বছরের ছয়‑সাত মাস ফেরি বন্ধ রাখার পাঁয়তারা চলছে।

মানববন্ধনে সাংবাদিক সালেহ নোমান, সমাজকর্মী আমজাদ হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসাইনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক‑সামাজিক সংগঠনের নেতা‑কর্মীরা বক্তব্য দেন। তারা কপোতাক্ষ ফেরি অব্যাহত রাখা, একই মানের অতিরিক্ত ফেরি দ্রুত সংযুক্ত করা, ঘোষিত সি‑ট্রাক দুটি দ্রুত নামানো এবং ফেরি‑বিরোধী চক্রকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সালেহ নোমান বলেন, “বিআইডব্লিউটিএ যদি উপকূলীয় ফেরি চালাতে সক্ষম না হয়, নৌ‑বাহিনীর সহায়তা বা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।” তিনি শত বছরের পুরোনো আবহাওয়া সতর্ক‑পদ্ধতি আধুনিক করার দাবিও তোলেন।

ইতোমধ্যে একই দাবিতে সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্সেও মানববন্ধন হয়েছে। সেখানে সভাপতিত্ব করেন যুবদল আহ্বায়ক প্রভাষক নিঝুম খান। জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন ও স্থানীয় প্রেস ক্লাবসহ নানা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে ফেরি অব্যাহত রাখার দাবিতে একাত্মতা জানান।

‘সন্দ্বীপ ছাত্র ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’‑সহ ১৫টির বেশি ছাত্র‑যুব ও পেশাজীবী সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়। আয়োজকেরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—দাবি মানা না হলে সড়ক‑নৌ অবরোধ থেকে শুরু করে ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।

সদ্বীপবাসীর ভাষায়, “বাঁশবাড়িয়া‑গুপ্তছড়া রুটে ফেরি চলবে—চলতেই হবে।”