অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম বৃহত্তম ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয় এই জামাত। শোলাকিয়ার ঈদগাহ মাঠে ইমামতি করেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইমামতি হারানো ইমাম কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে আসার সুবিধার্থে ঈদের দিন সকালে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা রাখে জেলা প্রশাসন।
ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ঈসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি ও বাংলাদেশকে রক্ষায় মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। সেই সঙ্গে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ঈদুল ফিতরের জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি আসলেও কোরবানির ব্যস্ততার কারণে ঈদুল আজহার জামাতে কিছুটা কম মুসল্লি এসেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
শোলাকিয়ার ঈদগাহ মাঠে ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহা. কাজেম উদ্দীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন।
এদিকে ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে আগে থেকে গড়ে তোলা হয় চার স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহর এবং আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি। বিজিবি, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১ হাজার ২০০ সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে। ৪টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন ও সিসি ক্যামেরা ছাড়াও ড্রোন ঈদগাহের ভেতর ও বাহিরের এলাকায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত ছিল।
এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন ঈদগাহের দিকে। প্রতি বছর ঈদের জামাতে এখানে লাখো মানুষের ঢল নামে। বড় জামাতে নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়, তাই এখানে প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেন অনেক মুসল্লি।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহা. কাজেম উদ্দীন জানান, ঈদুল আজহায় যাতায়াতকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল বলেও জানান তিনি।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া বলেন, ১৯৮তম ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব ব্যবস্থায় নেওয়া হয়েছিল। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করছে দুটি বিশেষ ট্রেন।
ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য মোট ২৩টি ফটকের মধ্যে ৫টি ফটকের প্রবেশপথ উন্মুক্ত রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন। এর আগে তিন দফা মেটাল ডিটেক্টরে সবার দেহ তল্লাশি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :