হেলাল উদ্দীন,বাগমারা : রাজশাহীর বৃহত্তম উপজেলা বাগমারার দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর বাজার। জেলা সদর রাজশাহীর সাথে এই দুটি স্থানের দূরত্ব পঞ্চাশ কিলোমিটার হলেও উন্নয়নের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে স্থান দুটি। ব্যবসা বানিজ্য ছাড়াও অনেক পর্যটক আসেন এখানে। বিশেষ করে তাহেরপুর বাজারটি ঐতিহাসিক এবং এখানে দূর্গপূজার উৎপত্তিস্থল হওয়ায় এখানে দূরদূরান্ত থেকে হিন্দু ধর্মালম্বীরা ছুটে আসেন। কিন্তু এখানে নেই তেমন কোন সুযোগ সুবিধা। তাই এই দুটি স্থানকে নানান ভাবে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান তিনি।
সম্প্রতি উপজেলার এক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ভবানীগঞ্জ বাজার ও তাহেরপুর বাজারকে সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে এই দুই বাজারের সৌন্দর্য বর্ধনের ঘোষনা দিয়েছেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল ইসলাম । বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এবং ব্যবসা বানিজ্যেরে প্রাণকেন্দ্র। সম্প্রতি এই দুই বাজারে দিনে-দুপুরে মোটরসাইকেল,ভ্যান, অটো সহ বিভিন্ন চুরি ছিনতাই মাদক সেবীদের অবাধ বিচরন সহ অপরাধ মূলক কর্মকান্ড উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে ভুক্তভোগি মহল কোনই প্রতিকার পায়না। এসব ঘটনায় পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও কোন সমাধান মিলে না। তাই ভোক্তভোগি মহল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দারস্থ হওয়া শুরু করেন। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাগমারার এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেন। ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাহেরপুর পৌরসভায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ অনেক এগিয়ে গেছেন। বাজার জরিপ কার্যক্রমও শেষ হয়েছে। খুব দ্রুতই এই কাজ শুরু হবে। তাহেরপুর বাজারের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এই ক্যামেরা নিয়ন্ত্রন করা হবে। তাহেরপুর পৌরসভা ও ফাঁড়ি পুলিশ এসব ক্যামেরার তদারকি করবেন। এ দিকে ভবানীগঞ্জ বাজার থেকে সাতদিনের ব্যবধানে তিনটি মোটরসাইকেল ও দুটি ভ্যান গাড়ি চুরির ঘটনাটি এলাকাবসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। তাই এই বাজারেও সিসি ক্যামেরা স্থাপন সহ বাজারের যানজট নিরসন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভবানীগঞ্জ বাজারের জিরো পয়েন্ট অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছে।
এ দিকে বাজারে চুরি ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রনে সিসি ক্যামেরা স্থপানের এই উদ্যোগকে স্থানীয়রা স্বাগত জানালেও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এসব ক্যামেরার রক্ষনা বেক্ষন ও তদারকি নিয়ে। তারা ঢাকা বরিশাল ও রাজশাহী সহ বড় বড় শহরের উদহারন তুলে ধরে বলেন, ওই সব শহরে ব্যাপক ঢাক ঢোল পিটিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে রক্ষনা বেক্ষন ও তদারকির অভাবে ওই সব ক্যামেরা দুই এক মাসের মধ্যে নষ্ট ও চুরি হয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে ইউএনও কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে আমরা তাড়াহুড়া করছি না। ভেবে চিন্তে এবং পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা হবে। যাতে জনগন এখান থেকে সেবা পায় এবং জনভোগান্তি লাঘব হয়।
অপর দিকে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা জুড়ে চলমান জনগুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে চলমান পুকুর খনন, চুরি, মাদক, যানজট, বিদ্যুৎ, নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ নিয়ে আলোচনা ও মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে। এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ”জনসেবাই প্রশাসন” এই লক্ষে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রত্যাশ অনেক । দেখা যাক কত দূর এগোতে পারি। বাগমারা উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলো পরিদর্শন করে গেছেন রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ রেজা হাসান অল্প সময়ের মধ্যে এই ডাকবাংলো সংস্কার কাজ শেষ করা হবে । এছাড়া আমরা ভবানীগঞ্জ হেলিপ্যাডের সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ অচিরেই শুরু করব। এই কাজে জেলা পরিষদ থেকে ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আমরা এর সঠিক ও যথাযত ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাই।
আপনার মতামত লিখুন :