ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনে শান্তি চায় না : রাশিয়া


editor প্রকাশের সময় : মার্চ ১৪, ২০২৫, ৪:২৫ অপরাহ্ণ /
ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনে শান্তি চায় না : রাশিয়া

অনলাইন ডেস্ক : ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনে শান্তি চায় না বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। এমনকি ইউক্রেনে উত্তেজনা বৃদ্ধি করা এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করাই এসব দেশের লক্ষ্য বলেও মন্তব্য করেছে দেশটি।

দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে এবং সম্প্রতি উভয় দেশের এই সংঘাত বন্ধে প্রচেষ্টা আরও জোরদার হয়েছে। এর মধ্যেই মস্কোর পক্ষ থেকে এই মন্তব্য সামনে এলো।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তসংস্থাটি বলছে, বৃহস্পতিবার রাশিয়া ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনে শান্তি প্রচেষ্টায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। দেশটি দাবি করেছে, তাদের (ইউরোপীয় দেশগুলোর) লক্ষ্য হচ্ছে— উত্তেজনা বৃদ্ধি করা এবং যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত করা।

আনাদোলুর এক প্রশ্নের জবাবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স পূর্ব ইউক্রেনের ওপর ২০১৪-২০১৫ সালের মিনস্ক চুক্তি লঙ্ঘনের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে। অন্যদিকে ব্রিটেন ২০২২ সালের মার্চ মাসে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সাথে আলোচনা করা থেকে নিরুৎসাহিত করেছে।

মস্কোর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই দেশগুলো ইউক্রেনীয় সংকট সমাধানের জন্য কোনও প্রচেষ্টা করেনি, যা ইউক্রেন সম্পর্কে তাদের অবস্থানকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছে।

তিনি বলেন, “যদি তারা তাদের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে — যা বর্তমানে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং রুশোফোবিয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি — তাহলে আমরা এটি বিবেচনা করব। কিন্তু আপাতত, তাদের উন্মত্ত অবস্থান বিবেচনা করার কোনও ভিত্তি নেই।”

জাখারোভা আরও দাবি করেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো সক্রিয়ভাবে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিরোধিতা করছে। ইউরোপের কিছু রাজনৈতিক শক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আলোচনা শুরু করার যে কোনও প্রচেষ্টাকে বাধা দিচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, “তারা (ইউরোপীয় দেশগুলো) ‘শান্তি’ এবং ‘সমাধান’ শব্দগুলো নিয়েই অস্বস্তিতে রয়েছে। তারা এটি চায়ই না। তাদের লক্ষ্য হলো উত্তেজনা বৃদ্ধি করা এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা। (ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির) জেলেনস্কি এবং তাকে সমর্থনকারী ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনে আরও অস্ত্র সরবরাহের জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছেন।”

ইউরোপ ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠানোর কথা ভাবছে এমন খবরের বিষয়ে জাখারোভা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যে কোনও অজুহাতে (ইউক্রেনে) বিদেশি সামরিক ইউনিট বা ঘাঁটি মোতায়েনের বিষয়টি হবে “একেবারে অগ্রহণযোগ্য”।

তিনি বলেন, “এর অর্থ হবে যে— ওই দেশগুলো সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে। আমরা আমাদের হাতে থাকা সমস্ত উপায় দিয়ে এর জবাব দেব। এই ধরনের পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে আরও খারাপ করতে পারে।”

ইউরোপের সামরিক গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি যুক্তি দেন, ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে এই মহাদেশে সংঘাতকে আরও উস্কে দেওয়া।

রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বিষয়ে জাখারোভা বলেন, ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সম্পর্ক উন্নত করার ইচ্ছাকে স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো। তবে তিনি বলেন, কথাগুলোকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমেই এগিয়ে নেওয়া উচিত, কারণ “আমরা আগে দেখেছি— তাদের কথা প্রায়শই তাদের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না।”