স্টাফ রিপোর্টার : ছয় বছরের শিশু আহনাফ। ছোট্ট শরীরজুড়ে রয়েছে চিকিৎসার নানা রকম যন্ত্রপাতি। এমন দৃশ্য পরিবারসহ স্বজনদেরও যেন কাঁদিয়ে ফেলছে। যে সময়ে সহপাঠীদের সঙ্গে ছুটোছুটি আর স্কুলে যাওয়ার কথা, সে সময় শুয়ে আছে হাসপাতালের বিছানায়। তার পরিবার চায় আহনাফ সুস্থ হয়ে উঠুক। অন্য শিশুদের মতো সে আবার স্কুলে যাক। মাহিউর রহমান আহনাফ জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়া নামের মেজর রোগে আক্রান্ত। তাকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টায় নিজেদের সবটুকু নিঃশেষ করে দিয়েছেন মা-বাবা।
আহনাফের বাবা শামসুল আলম বাবু। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত। তাঁর একমাত্র ছেলে আহনাফ। তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে ভারতে। প্রায় এক বছর ধরে শামসুল আলম সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছেন।
এ পর্যন্ত আহনাফের চিকিৎসায় ৮৫ লাখ টাকার অধিক খরচ করেছেন তিনি। ছেলের চিকিৎসার জন্য তিনি তাঁর সহায়-সম্বল পুরোটাই শেষ করে দিয়েছেন। শিশুটির চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু অসহায় বাবা, তাঁর একার পক্ষে এখন আর অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সবার কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করেও আশঙ্কামুক্ত নয় আহনাফ, দরকার আরও ৩০ লাখ টাকা।
শিশু আহনাফের মা আলেয়া ফেরদৌসী জানান, তাঁদের ছেলে আহনাফ জন্মগতভাবে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। এর জন্য প্রতি মাসে অন্যের রক্ত নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। এই রোগ থেকে সুস্থ হওয়ার একমাত্র উপায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট। তিনি আরও জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের গুরুগ্রামের ফোর্টিজ হাসপাতালে ডা. বিকাশ দুয়ার অধীনে তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। ট্রান্সপ্লান্টের ১১৫ দিন পর্যন্ত সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু প্রোটোকল শেষ হওয়ার চার দিন আগে ৬ এপ্রিল থেকে কমপ্লিকেশন শুরু হয়, যা এঠঐউ ও ঈগঠ ভাইরাস নামে পরিচিত।
আহনাফের মা বলেন, ‘এমন অবস্থায় আমাদের ৮০ লাখ টাকার ওপরে খরচ হয়ে গেছে। এই চিকিৎসার একেকটি ইনজেকশন অনেক ব্যয়বহুল এবং আহনাফের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ডাক্তার তাকে পুনরায় আইসিইউতে ভর্তি করান। এই চিকিৎসা চালানোর জন্য আরও ২৫ হাজার ডলার প্রয়োজন। কিন্তু এই অবস্থায় পরিবারের পক্ষে এই চিকিৎসার ব্যয় বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ইনজেকশন সঠিক সময়ে দিতে পারলে আহনাফ সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই আহনাফের বাবা-মা সবার কাছে আর্থিক সাহায্য ও দোয়া প্রার্থনা করছেন। সবার একটু ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা পেলে সবার মাঝে বেঁচে থাকতে পারবে আহনাফ।
আপনার মতামত লিখুন :