কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ে সম্মান দেখাতে শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ


editor প্রকাশের সময় : জুন ৮, ২০২৪, ৬:৫৭ অপরাহ্ণ /
কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ে সম্মান দেখাতে শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ

অনলাইন ডেস্ক : শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তারা জীবনবাজি রেখে আমাদেরকে এ দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। সেই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ তাদের সন্তানদের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক কোটার যে বিষয়টি ছিল, সেটা যথাযথ প্রতিপালনের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় অমনোযোগিতা ও অমান্য করা হচ্ছে। সে বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে একটি নির্দেশনা এসেছিল। আমরা সবাইকে অনুরোধ জানাব উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি ও নির্দেশনার প্রতি সবাই যথাযথভাবে সম্মান দেখাবেন।

শনিবার (৮ জুন) চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে জেলা প্রশাসনের ভূমিসেবা সপ্তাহ-২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেহেতু আদালতের রায় এখনো সুনির্দিষ্টভাবে আমার হাতে আসেনি বা পড়ে দেখতে পারেনি; তাই সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মন্তব্য আমি করছি না। তবে এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে মুক্তিযুদ্ধের এত সময় পরে এসেও তাদের সন্তানদের জন্য রাখা কোটার প্রশ্নে কিছু মানুষের এত উষ্মা, তা খুবই দুঃখজনক। দেশ যারা স্বাধীন করে দিয়েছেন তাদের সন্তানদের দিয়ে তারা যদি দ্বিতীয়বার প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে এটা কোনোভাবে কাম্য নয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্ণফুলী নদীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ যাতে দূষণ না হয় সেজন্য শিল্পনগরী গড়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় শিল্পনগরী বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরী। সেখানে বিশাল একটি এলাকার শিল্পায়ন এবং শিল্প সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সে হিসাবে আমি বলতে পারি, পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ যাতে আমরা না করি। বিশেষ করে নদী যে ব্যবস্থাপনা এবং পানির যে বিশুদ্ধতা, দূষণমুক্ত রাখা এবং নদীর চলাচলের উপযুক্ত রাখা, এ বিষয়ে তো শুধু আমাদের নির্বাহী বিভাগ বা সরকার নয়, বিচার বিভাগ থেকেও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। নদী রক্ষা করতে হবে। নদীর বহমান ধারা এবং সেটাকে বিশুদ্ধতা ডাকার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্য আছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমি সুনির্দিষ্টভাবে সেটি এখনো অবগত নই যদিও কেউ এরকম পরিকল্পনা করে থাকে। হঠাৎ নদীর মধ্যবর্তী জায়গায়, সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হবে। আমার যে সাধারণ দৃষ্টি, সেটিতে নদীর জন্য কখনো ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না বলে আমি নিজে মনে করি। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরিবেশ সংক্রান্ত ক্লিয়ারেন্স নিয়েছে কি না সেটা আমাদের দেখতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কোনো প্রকল্প করা, সেটা যথাযথ নয়। এ বিষয়ে আমি পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কথা বলব। শুধু আমার নির্বাচনী এলাকা বলে নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে কর্ণফুলী নদীর মাঝে বর্জ্য ফেলা হবে ও নিষ্কাশন করা হবে এবং বর্জ্য থেকে কী শিল্পায়িত কাজ করা হবে, সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, পরিবেশের জন্য এবং নদীর পরিবেশের জন্য সেটা ভেবে দেখা প্রয়োজন। হ্যাঁ বা না আমি কোনো কিছু বলব না। তবে কখনোই এটা পরিবেশের দিক থেকে যথাযথ হতে পারে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের পাকিস্তান নিয়ে বক্তব্য প্রসঙ্গে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এখনো কিছু রাজনৈতিক দল বলছে যে পাকিস্তানের সময় নাকি ভালো ছিল। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলছেন, পাকিস্তানের সময় নাকি ভালো ছিল। তো কতটুকু পাকিস্তানি প্রেম দেশের বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে সেই দলের মহাসচিবের মধ্যে থাকতে পারে সেটা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। এ ধরনের একটা পরিস্থিতিতে আমরা আছি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি স্বাধীনতার এতদিন পরে এসেও এরকম আছে কি না আমি জানি না। তারা কিন্তু বহাল তবিয়তে আছেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় কুচক্রীরা তাদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে তারা রয়ে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম। তারাই কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থাকে ধর্মনিরপেক্ষ সম্প্রদায়িক চেতনা বিচ্যুত করে সেটাকে এক ধরনের সাম্প্রদায়িকীকরণে প্রচেষ্টা তারাও করে।

শিক্ষা কারিকুলামে সব ধর্মের প্রতি সম্মানের ভূমিকা শক্তিশালী থাকবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় বলে এসেছি শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষা প্রক্রিয়া, পাঠদান ব্যবস্থা ও পাঠক্রমের মধ্যে সবসময় সব ধর্মের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধার জায়গাটাতে আমরা সবসময় শক্তিশালী ভূমিকায় থাকব। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কাজ শেখ হাসিনা সরকার কখনো করেনি, আগামীতেও করবে না। কিছু কিছু বিষয় তারা বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন সেগুলো অবশ্যই আমরা নিরসন করব।

শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, সেটা আমরা বিবেচনা করছি ঈদুল আজহার পরে। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও আমাদের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছিল।