সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ শাজাহান খানের


editor প্রকাশের সময় : মে ১০, ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ণ /
সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ শাজাহান খানের

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেছেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই সাংবাদিক বন্ধুরা বলে দেন, বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা (সাংবাদিক) কি গবেষণা করে দেখেছেন যে দুর্ঘটনা কেন ঘটেছে?

শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের নতুন বাস টার্মিনালে ফরিদপুর মটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

শাজাহান খান বলেন, গত বছর শিবচরে যে গাড়িটির দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা নিয়ে বলে দেয়া হলো- বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেল, ওই গাড়িটির সামনের চাকা বিস্ফোরিত হয়েছিল। সুতরাং আমি সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, দুর্ঘটনা ঘটলেই যেন বলা না হয়- এটা বেপরোয়া গতি। প্রথমদিকে এমন মন্তব্য করা ক্ষতিকর, মানুষের মাঝে বিপ্লবের সৃষ্টি করে।

চালক ও মালিক সমিতিগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি দুর্ঘটনা ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে না পারি, আমাদের অনেক বিপদ হবে। এছাড়া কোনো ড্রাইভারের সতর্কতার অভাবে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ মধ্যমস্তরে আছে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, দুর্ঘটনা হ্রাস করতে আমরা সরকারের কাছে ১১১টি সুপারিশ দিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। দুর্ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে এটা যারা মনে করেন, তারা আহম্মকের স্বর্গে বাস করেন। উন্নত দেশেও দুর্ঘটনা ঘটে। তবে, অন্যান্য দেশের তুলনায় দুর্ঘটনায় আমরা মধ্যস্তরে আছি।

বর্তমানে দুর্ঘটনায় বড় অংক জরিমানা হয় না উল্লেখ করে সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আগে দুর্ঘটনায় পড়লে, হাইকোর্টে মামলা হলে কোটি কোটি টাকা জরিমানা করা হতো। এই পরিস্থিতিতে পরিবহন মালিক সমিতি উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের পরে আর কোনো মোটা অংকের জরিমানা করা হয়নি। এভাবে প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে আমাদের পক্ষে ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উসমান আলী অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন না করার দাবি জানান। তিনি বলেন, আজ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন খড়্গ হিসেবে শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই, কিন্তু শ্রমিকদের দাবিয়ে রাখার জন্য এই আইন সংসদে নিয়ে আসা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিক সুরক্ষা আইন না হবে ততক্ষণ এই আইন পাস করতে দেওয়া হবে না।

উসমান আলী সমগ্র পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, সংসদে নতুন করে এই আইন তোলা হলে সেদিন থেকেই গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে যাবে, একটি গাড়ির চাকাও ঘুরবে না।

সভায় ফরিদপুর মটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি জুবায়ের জাকিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, মটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মাদ নাসির প্রমুখ।

এর আগে সংগঠনটির ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আয় ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ কাজী আরিফুজ্জামান শাহাদৎ। পরে এই সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত চালক এবং শ্রমিকদের ১৮৭টি পরিবারের মাঝে ২৫ হাজার টাকার চেক ও নগদ ২৫ হাজার করে টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।