লা লিগা: এল ক্লাসিকো জিতে শিরোপার আরো কাছাকাছি মাদ্রিদ


editor প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২২, ২০২৪, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ /
লা লিগা: এল ক্লাসিকো জিতে শিরোপার আরো কাছাকাছি মাদ্রিদ

অনলাইন ডেস্ক : এল ক্লাসিকো মানেই বাড়তি উত্তেজনা, বাড়তি নাটক। মৌসুমের শেষ ক্লাসিকোতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রোববার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ইনজুরি টাইমে জুড বেলিংহামের গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনাকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে লা লিগা শিরোপার আরো কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে ১১ পয়েন্টের সুস্পষ্ট ব্যবধানে বার্সেলোনাকে পিছনে ফেলে লিগ টেবিলের শীর্ষস্থান আরো মজবুত করেছে গ্যালাকটিকোরা।
মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি ইংলিশ মিডফিল্ডারের ভূয়শী প্রশংসা করেছেন। মৌসুমের এই সময়ে এসে এই ধরনের জয় আত্মবিশ^াস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে মাদ্রিদকে।
দুইবার পিছিয়ে থেকেও ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও লুকাস ভাসকুয়েজের গোলে দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে আসে মাদ্রিদ। আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেন প্রথমার্ধে ও ফারমিন লোপেজ দ্বিতীয়ার্ধে দুইবার বার্সেলোনাকে এগিয়ে দিয়েছিল। এরপর যোগ হওয়া সময়ে বেলিংহামের গোলে মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়।
আনচেলত্তি বলেছেন, ‘বেলিংহাম সঠিক সময়ে সঠিক কাজটাই করেছে। পুরো ম্যাচে সে দারুন পরিশ্রম করেছে। অনেকদিন যাবত বেলিংহাম গোল পাচ্ছিল না। তার এই গোলই হয়তোবা আমাদের লিগ শিরোপা জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছে।’
টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজির কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নেবার পর দারুন এক লড়াই উপহার দিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেলিংহামের কাছে তাদের নতি স্বীকার করতে হয়। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয় শেষ চার নিশ্চিত করা মাদ্রিদ ঐ একই গতি নিয়ে কাল মাঠে নেমেছিল। ঘরের মাঠে মৌসুমের শেষ ক্লাসিকো রাঙাতে কোন কার্পণ্য করেনি আনচেলত্তি শিষ্যরা। ২০ বছর বয়সী ইংলিশ মিডফিল্ডার বেলিংহাম অক্টোবরে বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম ক্লাসিকোতে জোড়া গোল করেছিলেন। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাবেক এই খেলোয়াড় এ পর্যন্ত সব ধরনের প্রতিযোগিতায় চলতি মৌসুমে ২১ গোল করেছেন।
মাদ্রিদের তিনটি গোলেরই মূল কারিগর ভাসকুয়েজ ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদ টিভিকে বলেছেন, ‘লা লিগা শিরোপা পথে আমরা অনেকটাই এগিয়ে গেছি। এই মৌসুমটা আমাদের দারুন কেটেছে। এখন শুধুমাত্র শেষটা ভাল করার অপেক্ষা। এজন্য আমরা সবকিছু করতে রাজী আছি।’
সিটির বিপক্ষে পেনাল্টি রক্ষা করা নায়ক, গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন ম্যাচের শুরুতেই ভুল করে বসেন। তার খেসারতও দিয়ে হয়েছে মাদ্রিদকে। ৬ মিনিটে ইউক্রেনিয়ান এই গোলরক্ষক তার লাইন থেকে বেরিয়ে এলে কর্ণার থেকে ক্রিস্টেনসেন ফাঁকা জালে বল জড়ান। যদিও দ্রুত স্পট কিক থেকে ভিনিসিয়াস মাদ্রিদকে সমতায় ফিরিয়েছেন। ভাজকুয়েজের পাসে হুয়াও ক্যান্সেলো বার্সার ডি বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়লে ১৭ বছর বয়সী সেন্টার-ব্যাক পও কুবারসি ফাউল করে বসেন। বার্সেলোনা অবশ্য এতে দমে যায়নি। একের পর এক আক্রমনে তারা মাদ্রিদের রক্ষনভাগকে ব্যস্ত রেখেছে। বিশেষ করে ডানদিক থেকে লামিন ইয়ামালা এডুয়ার্ডো কামভিনগাকে মোটেই স্বস্তি দেননি। কর্ণার থেকে ১৬ বছর বয়সী এই তরুণ তুর্কির চতুর ফ্লিক লুনিন রক্ষা করলেও বার্সেলোনার দাবী ছিল বলটি গোললাইন অতিক্রম করেছে। কোন ধরনের গোল-লাইন প্রযুক্তি না থাকায় ভিএআর এই গোল নিশ্চিত করতে পারেনি, যা নিয়ে কাতালানদের বেশ হতাশ হতে হয়।
ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ জাভি বলেছেন, ‘এর থেকে বেশী কিছু আমাদের পক্ষে করা সম্ভব ছিলনা। ফলাফল অবশ্যই আমাদের পক্ষে আসা উচিৎ ছিল। গোল-লাইন প্রযুক্তি না থাকাটা অপমানের।’
ফেডে ভালভার্দের চ্যালেঞ্জে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে গোঁড়ালিতে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারের সহায়তায় মাঠ ছাড়েন মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি জং, এতে বার্সেলোনা দু:শ্চিন্তায় পড়ে। বিরতির পর ক্রিস্টেনসেনের পরিবর্তে লোপেজকে মাঠে নামান জাভি। ৬৯ মিনিটে ইয়মালের লো শট আটকাতে গিয়ে পরাস্ত হলেও লোপেজ বল জালে জড়ান। ৭৩ মিনিটে ভিনিসিয়াসের ক্রসে ভাসকুয়েজ মাদ্রিদকে আবারো সমতায় ফেরান। ভিনিসিয়াসের একটি জোড়ালো শট দারুন ভাবে রক্ষা করেন মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান। স্টপেজ টাইমে ভাসকুয়েজের ক্রস থেকে বেলিংহাম আর কোন ভুল করেননি।
এর আগে দিনের শুরুতে আলাভেসের কাছে ২-০ গোলে হেরে শীর্ষ চারে টিকে থাকার লড়াইয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকা দিয়েগো সিমিওনের এ্যাথলেটিকো পঞ্চম স্থানে থাকা এ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।